শেখ হাসিনার পতনের পর বদলে গেছে বাংলাদেশের রাজনীতির সবকিছু। যেমনটা দেখা গেল রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের চিত্রটি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদত বার্ষিকীতে ১৫ আগস্টে এখানে প্রতিবছর লাখো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীতে ঠাঁসা থাকতো। এবারের চিত্রটি একেবারেই ভিন্ন। আজ ১৫ই আগস্ট এখানে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আশপাশের এলাকায় কাউকে কাউকে মারধর করতে দেখা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এই চিত্র দেখা যায়। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের আশপাশের এলাকায় অনেক মানুষ লাঠি, বাঁশ, পাইপ নিয়ে অবস্থান করছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, এই এলাকায় কেউ এলেই তাঁদের থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কোথায় যাচ্ছেন, কেন এসেছেন, তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। এমনকি পরিচয়পত্র, মুঠোফোন দেখা হচ্ছে। ৩২ নম্বর সড়কে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
এই এলাকায় কখনো কাউকে কাউকে ধাওয়া দিতে দেখা গেছে। জটলা পাকিয়ে কাউকে মারধর করতেও দেখা গেছে। প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকার এর আগেই ঘোষণা দিয়েছে, জাতীয় শোক দিবসের কোনো ছুটি নেই।
এলাকাটিতে অবস্থানকারী পাহারায় রত কয়েকজন জানান, তাঁরা গতকাল বুধবার রাত থেকে এখানে অবস্থানে আছেন। তাঁরা কাউকে স্মৃতি জাদুঘরের দিকে যেতে দিচ্ছেন না। আজ ১৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে একদল বিপথগামী সেনাসদস্য ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের এই বাড়িতেই বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে সপরিবার হত্যা করেন।
শেখ হাসিনার সরকারের গত প্রায় ১৫ বছরের শাসনকালে প্রতিবছর ১৫ আগস্ট বহু মানুষ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আসতেন বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। এদিন ৩২ নম্বরের এই বাড়িতে আগুনও দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগীরা ১৫ আগস্টে ‘পাল্টা অভ্যুত্থানের’ চেষ্টা করতে পারেন, এমন খবর পেয়েছেন বলে দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা বলেছেন, কেউ এ ধরনের কোনো চেষ্টা করলে প্রতিহত করা হবে। আজ সবাইকে রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। এ কারণে রাজপথ আজ তাদেরই দখলে।