আগ্রাসী ভূমিকায় ডেঙ্গু, একদিনই ১০ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
3 November 2024 1:36 am
২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু সনাক্ত হয় দেশে। দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় গত বছর।

২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু সনাক্ত হয় দেশে। দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় গত বছর।

দেশে আবারো ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। বেড়েছে মৃত্যুও। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর এক দিনে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংখ্যায় মৃত্যু হলো। সাধারণত নভেম্বরে ডেঙ্গু জ্বরে সংক্রমণ কমে যায়। আর সংক্রমণ কমে আসার ফলে কমে যায় মৃত্যুর সংখ্যাও। কিন্তু চলতি মাসের শুরুতেই মৃত্যুর এই ঊর্ধ্বগতি জনস্বাস্থ্যবিদ এবং চিকিৎসকদের ভাবিয়ে তুলেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অক্টোবরজুড়ে ডেঙ্গুতে সংক্রমণ বেশি থাকার কারণে এ রোগে আক্রান্ত হওয়া জটিল রোগীদের মৃত্যু হচ্ছে। এখন সংক্রমণ কমাতে যেমন তৎপরতা দরকার, তেমনি দরকার চিকিৎসাব্যবস্থা আরও ঢেলে সাজানো।

শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আজ সকাল আটটা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় সর্বোচ্চ চারজন, বরিশাল বিভাগে তিনজন এবং সিটি করপোরেশন ছাড়া ঢাকা বিভাগ, খুলনা বিভাগ ও ময়মনসিংহ বিভাগে একজন করে মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ বছরের জুলাই থেকে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ওই মাসে ডেঙ্গুতে ২ হাজার ৬৬৯ জন আক্রান্ত হন। পরের মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৫২১। সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩ গুণ বেড়ে হয় ১৮ হাজার ৯৭। গত অক্টোবর মাসে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ৩০ হাজার ৮৭৯ জন। আর সেই মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয় ১৩৪ জনের।

২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু সনাক্ত হয় দেশে। দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় গত বছর। তখন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আর মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ৩৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই সময় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৭৯ হাজার ৫৯৮ জন।

নভেম্বরে সাধারণত ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে যায়। কিন্তু এবার এ মাসের শুরু থেকেই সংক্রমণ যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে মৃত্যুও। এর কারণ মশার ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবীরুল বাশার যেমনটা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা গবেষণায় দেখছি, এডিস মশার ঘনত্ব বেশি আছে; কিন্তু এ মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়।’