আওয়ামী লীগের পর বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘বিএনপি বা এর শীর্ষ নেতৃত্বকে’ রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার কোন ইঙ্গিত দলটি পাচ্ছে কি না সেই প্রশ্নও আলোচিত হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের রাজনীতির আতুর ঘর। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে লাপাত্তা। সম্প্রতি ছাত্রদলের পক্ষ থেকে হলে পোস্টার টাঙাতে গেলে হাঙ্গামা হয়। পোস্টার সাঁটানোর বিরুদ্ধে ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিলও বের করে। গণআন্দোলনের ছাত্রনেতারা প্রকাশ্যেই ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির বিপক্ষে বলছেন। সব মিলিয়ে ছাত্রলীগের পর ছাত্রদলকেও কি বিদায় নিতে হচ্ছে ক্যাম্পাস থেকে? অনেকে প্রশ্নটি তুলছেন।
এদিকে বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘মাইনাস-২ ফর্মুলা’র বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করার পর বিষয়টি নিয়ে দলটির ভেতরে ও বাইরে নানা ধরনের আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে কি সরকার ওয়ান-ইলেভেনকালের সেই ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলার দিকে যাচ্ছে?
বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘বিএনপি বা এর শীর্ষ নেতৃত্বকে’ রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার কোন ইঙ্গিত দলটি পাচ্ছে কি না সেই প্রশ্নও আলোচিত হচ্ছে।
মি. আলমগীর অবশ্য বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘বিরাজনীতিকরণের বিষয়ে সতর্ক’ করতে গিয়ে তিনি ‘মাইনাস-টু’ ফর্মুলার উল্লেখ করেছেন। তবে এখন দেশে ‘বিরাজনীতিকরণের’ চেষ্টা হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের তিনি সরাসরি কোন জবাব দেননি। তবে সরকারের একজন উপদেষ্টা সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, মাইনাস-টু নিয়ে কোন চিন্তা বর্তমান সরকারের নেই।
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, তারা সবাইকে নিয়েই রাজনীতি করতে চান।
“বিএনপিকে বাদ দেয়ার প্রশ্নই আসে না। এখন বিএনপি কেন এমন ভাবছে তা আমাদের জানা নেই,” গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন।
একজন বিশ্লেষক বলছেন, নির্বাচনকে দৃশ্যত কম গুরুত্ব দেয়া আর বিএনপিকে ইঙ্গিত করে আসা বিভিন্ন বক্তব্যের কারণেই হয়তো দলটির মধ্যে মাইনাস-টু ফর্মুলার বিষয়টি সামনে এসেছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলো। তখন দুই প্রধান নেত্রী খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে জেলে নেবার পর ‘মাইনাস -টু ফর্মুলা’র আলোচনা জোরদার হয়েছিলো।
তখন তাদের দলসহ অনেকেই অভিযোগ করেছিলো যে, ‘দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে’- যা পরে ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
এবারের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ও এর নেত্রী শেখ হাসিনা উৎখাত হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এরপর থেকে বিএনপি দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দাবি করে আসছে। তবে সরকারের দিক থেকে বারবারই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের ওপর। যদিও এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য গঠিত সার্চ কমিটি তাদের কাজ শুরু করেছে।
অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের অনেকেই আকারে ইঙ্গিতে বলার চেষ্টা করছেন যে ‘আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচন’। পাশাপাশি বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনগুলোও কাজ করতে শুরু করেছে, যার মধ্যে সংবিধান, পুলিশ ও প্রশাসন সংস্কারের মতো কমিশন রয়েছে।
মাইনাস-টু বিষয়ে কী বলেছেন বিএনপি মহাসচিব
ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২০০৭ সালে ১/১১-এর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় বিরাজনীতিকরণে এবং মাইনাস-টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের ব্যর্থ চেষ্টা হয়েছিল।
“সেই পথ অনুসরণ করার কথা চিন্তাও করা উচিত নয়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপিকে কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। কারণ বাংলাদেশের জনগণ কখনোই তা মেনে নেবে না। আওয়ামী লীগ বিএনপিকে নানাভাবে ভাঙার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে, ভবিষ্যতেও পারবে না,” বলছেন তিনি।
মি. আলমগীর বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা অপ্রত্যাশিত ও অযাচিত মন্তব্য করে বলেছেন, রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় যেতে অস্থির। ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তার মতো কোনো ব্যক্তি এ ধরনের মন্তব্য করবেন তা আমরা আশা করি না’।
“আমরা আশা করিনি, এ মাপের মানুষ এ ধরনের কথা বলবেন। আমরা রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উসখুস করি না। আমরা বাংলাদেশকে হাসিনামুক্ত করার জন্য কাজ করেছি। জীবন দিয়েছি, প্রাণ দিয়েছি, এখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা দ্রুত নির্বাচন দাবি করছি”।
দেশে অতি দ্রুত নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “দ্রুত নির্বাচনে যত দেরি করবেন, তত হাসিনারা আবার ফিরে আসবেন। তাই এখনও বলছি, আবারও বলছি, অতি দ্রুত নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন। জঞ্জাল যা আছে, তা সাফ করে ফেলুন”।
প্রসঙ্গত, সোমবার সরকারের একজন উপদেষ্টা সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, “আমাদের হাতে সময় খুবই কম। কম সময়ে কতটুকু কাজ করতে পারব জানি না। রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় যেতে উসখুস করছেন। আমিও আমার শিক্ষকতা পেশায় ফিরে যেতে চাই”।
সরকারের দিক থেকে যা বলা হচ্ছে
বিএনপির মহাসচিবের বক্তব্য গণমাধ্যমে আসার পর আজ সরকারের দুজন উপদেষ্টা বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দিয়েছেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্বাচনকে বিএনপি অগ্রাধিকার দেবে সেটাই স্বাভাবিক এবং সরকারেরও চূড়ান্ত লক্ষ্য সেটি।
“তবে নির্বাচনের আগে কোথাও কতটুকু সংস্কার দরকার সেদিকেও সরকারকে মনোযোগ দিতে হচ্ছে,” বলেছেন তিনি। আরেকজন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মাইনাস-টু কোনভাবেই বর্তমান সরকারের কোন এজেন্ডা না।
“এ ধরনের কথা বলা অহেতুক তর্ক, অহেতুক সমস্যা ও জনমনে আশঙ্কা সৃষ্টি করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের কোন চিন্তায় এমন কিছু নেই,” সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন।
মাইনাস টু প্রসঙ্গ এলো কেন
মাইনাস-টু বিষয়ে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আমরা আসলে বিরাজনীতিকরণের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করছি। আমরা সবসময় বলে আসছি সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের জন্য যাতে দ্রুত জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী গণতন্ত্রে উত্তরণে সম্ভব হয়”।
“অনেকে নানা ধরনের কথা বলছেন বলে আমরা শুনছি। সংবিধান সংস্কারসহ আর কিছু বিষয়ে আমরা বলেছি যে এগুলো জনগণের নির্বাচিত সংসদ বা জনপ্রতিনিধিদের কাজ। সে কারণেই আমরা জরুরি সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের কথা বলছি”।
কিন্তু মাইনাস টু অর্থাৎ বিএনপি চেয়ারপার্সন বা শীর্ষ নেতৃত্বকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে নেয়ার কোন আশঙ্কা বিএনপি করছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “না, আমরা সেটি বলছি না। আমরা বিরাজনীতিকরণের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করার কথা বলছি। বিরাজনীতিকরণের চিন্তা জাতির জন্য ভালো ফল আগেও আনেনি, ভবিষ্যতেও আনবে না”।
ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়ার পর থেকে গত তিন মাস ধরে আওয়ামী লীগের কোন কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। দলটির প্রধান শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ বেশিরভাগ নেতাই বিভিন্ন দেশে পালিয়ে গেছেন বা লুকিয়ে রয়েছেন। এর মধ্যেই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনাসহ দলটির অনেক নেতার বিরুদ্ধে এর মধ্যেই শতাধিক মামলা হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মানবতা বিরোধী অপরাধে দলের প্রধান শেখ হাসিনার বিচারের প্রক্রিয়া চলছে।
গত মাসে শেষের দিকে আওয়ামী লীগকে ‘একটি ফ্যাসিস্ট দল’ বর্ণনা করে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ”যদি আওয়ামী লীগ ফিরে আসে, তাহলে গণ–অভ্যুত্থান ও শহীদদের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে। আমাদের জীবন থাকতে তা হতে দেওয়া হবে না।”
ফলে কার্যত এখন বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে আওয়ামী লীগ ও দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনা বাইরে চলে গেছেন।
এখন বিএনপির মধ্যেও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, তাদেরকেও রাজনীতির মাঠ থেকে বাইরে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা হতে পারে।
বিএনপির একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম দ্রুতগতিতে শুরু না করে রাষ্ট্রপতি পরিবর্তনের চেষ্টা, সরকার ঘনিষ্ঠদের কিংস পার্টি গঠনের তৎপরতা, সংবিধান সংস্কার নিয়ে অতিমাত্রায় আগ্রহ এবং তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে থাকা আইনি বাধা অপসারণে ধীরগতিসহ কিছু বিষয় নিয়ে দলটির নেতৃত্ব কিছুটা অসন্তুষ্ট।
এছাড়া বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সরকারের কিছু উপদেষ্টা ও সরকার ঘনিষ্ঠ ছাত্রনেতাদের কয়েকজনের বক্তব্যও দলটির নেতাকর্মীদের ক্ষুব্ধ করেছে। তাদের কেউ কেউ মনে করছেন ‘বিএনপিকে উপেক্ষা করার একটা’ ইঙ্গিত ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, তারা মনে করেন বাংলাদেশের বাস্তবতায় বিএনপি সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল এবং সে কারণে যা কিছু করার সেটা বিএনপিকে আস্থায় নিয়েই করতে হবে— এটাই বিএনপি মহাসচিব বোঝাতে চেয়েছেন।
“কিন্তু কারও কারও মন্তব্য বা কোন কোন মহল এমন কিছুর আভাস দিচ্ছেন যে মনে হচ্ছে তারা বিএনপিকে উপেক্ষা করতে চাইছেন। মনে রাখতে হবে শেখ হাসিনা অনেক চেষ্টা করেও খালেদা জিয়াকে মাইনাস করতে পারেনি। সেখানে বড় দল হিসেবে এখনও বিএনপিকে উপেক্ষা করা যাবে না,” মি. মাহমুদ বলছিলেন।
কিন্তু খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে রাখা বা তারেক রহমানকে দেশে ফেরতে দেয়ার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা তৈরি করা – এমন কোন বিষয় আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এমন দুরভিসন্ধি কেউ পোষণ করতে পারেন। কিন্তু তাতে কোন লাভ হবে না। বরং আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে পারি বাংলাদেশে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাইপাস করে কিছু হবে না”।
প্রসঙ্গত, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার চলতি সপ্তাহেই চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কবে নাগাদ দেশে ফিরতে পারবেন তাও এখনো দলটি নিশ্চিত হতে পারেনি।
কিছু মামলা থেকে তিনি অব্যাহতি পেলেও সব আইনি বাধা অপসারণে প্রশাসনিক ধীরগতিতে দলের অনেকের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কারও কারও বক্তৃতাও বিএনপিকে ইঙ্গিত করে দেয়া হয়েছে বলে মনে করছেন দলের নেতারা।
আবার বিএনপির বিরোধিতা সত্ত্বেও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়ে ছাত্র সমন্বয়কদের কারও কারও বক্তৃতার ‘ভাষাও’ দলটির সিনিয়র নেতাদের ভালো লাগেনি।
এর মধ্যেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সারাদেশে কমিটি গঠনের যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে তাকে ‘কিংস পার্টি’ গঠনের প্রক্রিয়া বলেই মনে করছেন বিএনপির অনেক নেতা। তাদের কারও কারও ধারণা সরকারি সমর্থন নিয়ে এ ধরনের দল হলে সেটি পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে তুলবে।
“একটা ঘোলাটে অবস্থা কিন্তু দেখা যাচ্ছে। এর লক্ষ্য যদি হয় বিএনপি যেন ক্ষমতায় আসতে না পরে- সেটি নিশ্চিত করা –এমন অবাস্তব চিন্তা হবে দু:খজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত,” বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য বলছিলেন।
যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেছেন যে তারা রাজনীতি থেকে কাউকে বাদ দিতে চান না।
“ আমরা সবাইকে নিয়ে রাজনীতি করতে চাই। বিএনপিকে বাদ দেয়ার তো প্রশ্নই নেই। সরকারও সবার সাথে কথা বলছে। সবার আগে আলোচনায় বিএনপিকেই ডাকা হচ্ছে। বরং সরকার বিএনপিকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। এখন বিএনপি কেন এমন ভাবছে তা আমাদের জানা নেই,” বলছিলেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মামুন আল মোস্তফা বলছেন, সরকার কিংবা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকে নির্বাচনকে কম গুরুত্ব দিয়ে সংস্কারের দিকে বেশী গুরুত্ব দেয়ার কারণেই বিএনপির মধ্যে কথিত ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলার আলোচনা এসেছে বলে মনে হচ্ছে।
“২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেন সরকারও প্রথমে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলো। শেষ পর্যন্ত সেটি মাইনাস টু ফর্মুলায় রূপ নেয়ার অভিযোগ উঠেছিলো। এবার গণঅভ্যুত্থানে বড় একটি দল উৎখাত হয়ে গেছে। বিএনপি হয়তো ভাবছে সংস্কারের নামে নির্বাচন প্রলম্বিত করে বা কিংস পার্টির মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায় আসা বিলম্বিত করার চেষ্টা হচ্ছে। আমার ধারণা এ কারণেই তারা মাইনাস টু ফর্মুলার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে,” বলছিলেন তিনি।
তাছাড়া বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে সরকার কিংবা সরকার ঘনিষ্ঠ কারও কারও বক্তৃতাও দলটিকে উদ্বিগ্ন করতে পারে বলে মনে করেন মি. মোস্তফা।
সূত্র : বিবিসি