জাতীয় সংগীত ইস্যুতে অবস্থান পরিস্কার করল জামায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক
9 September 2024 3:23 am
জামায়াত এক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, আযমীর মন্তব্যের সঙ্গে সংগঠনটির কোনো সম্পর্ক নেই।

জামায়াত এক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, আযমীর মন্তব্যের সঙ্গে সংগঠনটির কোনো সম্পর্ক নেই।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ইস্যু নিয়ে তুমুল বিতণ্ডা চলছে সামাজিক মাধ্যমে। জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি তুলে সমালোচিত হওয়া জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের ছেলে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমীর বক্তব্যের কারণে এই বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। জাতীয় সংগীত ইস্যুতে তাই অবস্থান পরিস্কার করল জামায়াত।

জামায়াত এক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, আযমীর মন্তব্যের সঙ্গে সংগঠনটির কোনো সম্পর্ক নেই। দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার রবিবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন।

পরওয়ার বলেন, অতি সম্প্রতি আমান আযমীর বক্তব্য নিয়ে কিছু জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি জামায়াতের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য হলো, আমান আযমী জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি নন।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে মি. আযমীর কোনো সাংগঠনিক সম্পর্কও নেই। যোগ করেন পরওয়ার।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, তিনি জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিত্ব করেন না। তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন, তা তার একান্ত ব্যক্তিগত। সুতরাং তার তার বক্তব্যকে জামায়াতে ইসলামীর সাথে সংশ্লিষ্ট করার কোনো সুযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, প্রায় আট বছর ‘আয়নাঘরে’ বন্দী থাকার পর সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছেন সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী। গত পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের দুই দিন পর বাড়ি ফিরেন মি. আযমী।

বন্দী থাকার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গত তেসরা সেপ্টেম্বর অনলাইনে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। সেখানে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরার পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদের প্রকৃত সংখ্যা ও জাতীয় সংগীত নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন মি. আযমী।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত যেন নতুন করে লেখা হয়, সেই দাবিও করেছিলেন তিনি। ওই ঘটনার পর বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচিত হতে দেখা গেছে মি. আযমীকে।

এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অনেকে তীব্র সমালোচনা করেন। ওই বক্তব্যের বিরুদ্ধে অনেকে কর্মসূচিও পালন করে। আবার কাউকে কাউকে তার ওই বক্তব্য সমর্থন করতেও দেখা গেছে।

তার বাবা জামায়াতের এক সময়ের বড় নেতা হওয়ায় অনেকে এসব বক্তব্যের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলেছিলেন।

ওই সংবাদ সম্মেলনটি জামায়াতে ইসলামীর ফেসবুক পাতায় সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছিল। তাকে র‍্যাংক ব্যাজ পড়ানোর ছবিও জামায়াতে ইসলামীর পেজে শেয়ার করা হয়েছে। যদিও তিনি দলটির কোন পদে নেই বা ছিলেন না।

এমন পরিপ্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করলো জামায়াতে ইসলামী।

ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার বক্তব্যের শুরুতেই “২৯ হাজার ৭৯৪ ঘণ্টার নির্মম জীবন থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য” বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সেইসাথে, সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকেও ধন্যবাদ দেন তিনি।

যারা তাকে এবং অন্যদেরকে গুম করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দাবি করেন তিনি।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশকে ৫০ বছর দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানান, যাতে তারা এই সরকারকের প্রতি সর্বাত্মক সহায়তা অব্যাহত রাখে।