সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সর্বাত্মক অসহযোগের দ্বিতীয় দিনই লক্ষ্যে পৌঁছে গেল ছাত্ররা। ছাত্রশক্তির জয় হলো। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার টানা পনের বছরের দুঃশাসনের ইতি ঘটলো। ইতিহাসের পাতায় ৫ আগস্ট নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টির দিন হিসেবে লেখা থাকবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম দিকে এর নাম ছিল কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কিন্তু শেখ হাসিনা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনটি রুখে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদের রাজাকার বলে আখ্যা দেন। এরপরই ছাত্ররা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। পাল্টা হিসেবে সরকারের পুলিশ গুলি চালায়। জোর প্রয়োগের প্রথমদিনই ছয়জন নিহত হন। এরমধ্যে টার্নিং পয়েন্ট ছিল উত্তরাঞ্চলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদের নিহত হওয়ার ঘটনাটি। মূহর্তে খবরটি ছড়িয়ে পড়ে অন্তর্জালে। এরপর প্রতিদিনই আন্দোলনের বেগ বাড়তে থাকে।
এক পর্যায়ে ছাত্রদের ডাকে ৫ আগস্ট ঢাকামুখী লং মার্চের কর্মসূচি দেওয়া হয়। এদিনই রাজধানীতে প্রবেশ করে লাখো জনতা। এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
তুমুল গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে জনতা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। রাজধানীতে কোটি মানুষ নেমে আসেন পথে।
বিবিসি লিখেছে, শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়েছেন। তার সাথে তার বোন শেখ রেহানাও রয়েছেন। তারা যাচ্ছেন ভারতের আগরতলার দিকে। একটি ভিডিওচিত্রও অন্তর্জালে ছড়িয়ে পড়ে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ঢাকামুখী লং মার্চের মধ্য দিয়ে ঢাকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া জনতা এদিন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন ও সংসদ ভবনে ঢুকে পড়ে। তারা হাতের কাছে যে যা পায় তাই নিয়ে নেয়।